প্রকাশিত: সেপ্টেম্বর ২২, ২০২৫
প্রকাশিত:
স্বৈরাচারী সরকারে প্রধান অর্থযোগানদাতা গনপূর্ত অধিদপ্তরের প্রধান প্রকৌশলী শামীম আকতার
আওয়ামীলীগের দোসরদের সাথে তার এখনো সু-সম্পর্ক, তাদের নিয়ে আলাদা মিটিং সিটিং করেন , তাদের কাজ দেন অর্থদেন , তাদের সর্বদিক থেকে প্রকাশ্যে সহযোগিতা করে থাকেন।তারপরও তিনি বহাল তবিয়তে !!
বিশেষ প্রতিনিধি ঃ
স্বৈরাচারী সরকার শেখ হাসিনার দোসর গণপূর্তের প্রধান প্রকৌশলী শামীম আকতারসহ ১৬ প্রকোশলী ২০২৪ এর ছাত্র জনতার আন্দোলন পন্ড করে দেয়ার জন্য সরকারের আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর অসাধু কর্মকর্তাদের কাছে কোটি কোটি টাকা দিয়ে সহযোগিতা করেছে। যার ফলে আন্দোলন শেষ হওয়ার পর রাজধানীর বিভিন্ন থানায় তাদের নামে হত্যা মামলা রুজু হয়েছে।কিন্তু হত্যা মামলা হলেও বর্তমানে তারা বীরদর্পে আনন্দে ঘুরছে।এই অর্থ যোগানদাতা প্রকৌশলীদের নামে রাজধানীর বাড্ডা,পল্টন, রামপুরা থানা ও সাভার থানায় পৃথক পৃথক হত্যা মামলা রয়েছে। তার মধ্যে রামপুরা থানার মামলা নং -১৮, মামলা রয়েছে অপর দিকে ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতেও মামলা হয়েছে।বিজ্ঞ আদালত স্বারক নং-২৬৮ তারিখ ২৫/০২/২০২৫ ইং মুলে সি আর মামলা নং -৬৩/২০২৫ বিজ্ঞ আদালতের আদেশ নংসহ ০৩/০৩/২০২৫ ইং, তারিখ প্রাপ্ত হইয়া বাড্ডা থানার মামলা নং- ০৬ তারিখ ০৩/০৩/২০২৫ ধারা -১৪৭/১৪৮/৩২৬/৩০৭/৫০৬/৩৪ পেনাল কোড রুজু হয়েছে।এদের মধ্যে অনেকেই ছিলেন বঙ্গবন্ধু প্রকৌশলী পরিষদের সক্রিয় সদস্য। আবার কেউ ছিলেন সরাসরি গণভবনকেন্দ্রিক। দুর্নীতির বরপুত্র নির্বাহী প্রকৌশলী মোঃ সাইফুজ্জামান চুন্নু ও নির্বাহী প্রকৌশলী আজমল হক বর্তমানে প্রধান প্রকৌশলীর স্টাফ অফিসার হিসেবে আছেন।
মন্ত্রী মুক্তাদির চৌধুরীর নির্দেশে ১৮ জুলাই মোঃ শামীম আখতার, প্রধান প্রকৌশলী গনপুর্ত অধিদপ্তর, রামপুরা থানার ১৮/১৯৩ নং হত্যা মামলার ২৮ নং আসামি ও আওয়ামী লীগ নেতা মেহেদী হাসান জয়কে তার ক্যাশিয়ার নুসরাত হোসেনের (বর্তমানে কারাগারে ) মাধ্যমে ৩ কোটি টাকা পৌঁছে দেন |
এছাড়া দরবেশ খ্যাত সালমান এফ রহমানের নির্দেশে কেরানীগঞ্জের স্থায়ী বাসিন্দা আওয়ামী লীগ নেতা এবং এ হত্যা মামলার ৩২ নং আসামি মোবারকের নিকট নুসরাত হোসেনের মাধ্যমে ২ কোটি টাকা পৌঁছে দেন | এই টাকা যুবলীগের স্থানীয় নেতাকর্মীকে বন্টন করে আন্দোলন পন্ড করার জন্য আওয়ামী লীগ নেতৃবৃন্দকে লাঠিসোঠাসহ ব্যাপক উপস্থিতি নিশ্চিত করার জন্য বলেন |
গোয়েন্দা সংস্থা ও দুদক সূত্র বলছে, অনেকের অভিযোগ আমলে নেয়া হয়েছে। ক্রমান্বয়ে সবাইকে আইনের আওতায় আনা হবে ও দুদকের জালে আটকা পড়বে। পতিত সরকারের আমলে সংজ্ঞবদ্ধ এই চক্রটি লুটেপুটে খেয়েছেন। একেকজন আঙ্গুল ফুলে কলা গাছ হয়ে গেছেন। তাদের অবৈধ সম্পদের খবর খোদ দুদক ও গোয়েন্দা সংস্থার কাছে রয়েছে।
সূত্রমতে, ঐসব প্রকৌশলী ছাত্র-জনতার আন্দোলন ঠেকাতে কোটি কোটি টাকা জোগান দিয়েছেন। তৎকালীন ডিএমপি কমিশনার হাবিবুর রহমান ও ডিবি প্রধান হারুন উর রশিদ হারুন, এসবি প্রধান মনিরুল ইসলাম ও বিপ্লব কুমার সরকারকে অর্থের যোগান দিয়েছেন। অনেকের বিরুদ্ধে দুর্নীতি দমন কমিশনে (দুদক) অভিযোগ জমা পড়েছে। দুদক অভিযোগ গুলো আমলে নিয়ে তদন্ত করছে বলে জানা গেছে।
জানা যায়, অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তী সরকার ক্ষমতায় বসার পর আন্দোলন ভন্ডুল করার চেষ্টাকারীদের দোসর হিসেবে পরিচিত এসব।
স্বৈরাচারী সরকারের দোসর, অর্থ যোগানদাতা প্রকৌশলীরা
পুলিশ সদর দপ্তর সূত্রে জানা যায়, ছাত্র-জনতা হত্যা মামলার আসামিদের মধ্যে রয়েছেন গণপূর্ত অধিদপ্তরের প্রধান প্রকৌশলী শামীম আখতার, অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী (ঢাকা জোন) শামছুদ্দোহা, অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী (সংস্থাপন) শহিদুল আলম, অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী (ই/এম) আলমগীর হোসেন, অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী মোসলেহ উদ্দিন আহাম্মাদ; তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী ইলিয়াস আহম্মেদ, তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী মনিরুল ইসলাম, তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী সতীনাথ বসাক ও তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী জাকির হোসেন,নির্বাহী প্রকৌশলী মোঃ সাইফুজ্জামান চুন্নু, নির্বাহী প্রকৌশলী আজমল ও নির্বাহী প্রকৌশলী আহসান হাবীব, নির্বাহী প্রকৌশলী আবুল কালাম আজাদ, নির্বাহী প্রকৌশলী মোস্তাফিজুর রহমান, নির্বাহী প্রকৌশলী আমানউল্লাহ আমান,নির্বাহী প্রকৌশলী মাহবুবুর রহমান।
তবে তদন্ত সাপেক্ষে এদের সাথে আরো এক ডজন নাম আসামির তালিকায় যোগ হতে পারে বলে আইন শৃঙ্খলা বাহিনী সূত্রে জানা গেছে। পুলিশের মাসিক মিটিংয়ে এসব আসামিদের বিষয়ে যাচাই-বাছাই ও পর্যালোচনা করা হচ্ছে বলে জানান।
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, ডিসেম্বরে অবসরে যাবেন প্রধান প্রকৌশলী শামীম আক্তার। তিনি আরেকবার প্রধান প্রকৌশলী থাকার জন্য ভেতরে ভেতরে তদবির করছেন।
আশরাফুল আলম গণপূর্ত অধিদপ্তরে অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী। আশরাফুল আলম বর্তমানে রিজার্ভে আছেন। তিনি সহ কয়েকজন জোর চেষ্টা চালাচ্ছেন প্রধান প্রকৌশলী পদের জন্য ।
প্রধান প্রকৌশলীর দায়িত্ব নিতে মরিয়া বলে গুঞ্জন রয়েছে অধিদপ্তর জুড়ে । তার বিরুদ্ধে ছাত্র-জনতার আন্দোলন দমনে সহযোগিতার অভিযোগ রয়েছে।
এছাড়া অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী মোঃ শামসুদ্দোহা (পরিকল্পনা ও বিশেষ প্রকল্পের দায়িত্বপ্রাপ্ত), অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী মোঃ আবুল খায়ের (সংস্থাপনা সমন্বয়ক), অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী খালেকুজ্জামান চৌধুরী (গণপূর্ত মেট্রোপলিটন জোন) এবং অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী ড. মঈনুল ইসলাম নিজ নিজ অবস্থান থেকে প্রধান প্রকৌশলী হওয়ার জন্য জোরালোভাবে লবিং করছেন।
গণপূর্ত অধিদপ্তরের প্রধান প্রকৌশলী মোহাম্মদ শামীম আখতারের ফোনে কল করা হলে তিনি ফোন রিসিভ করেননি।
এদিকে গণপূর্তের দাপুটে প্রকৌশলীদেরকে বিভিন্ন জায়গায় বদলি করা হলেও তাদের বিরুদ্ধে আইনী কোন ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়নি। নেয়া হয়নি তাদের পাহাড় সমপরিমাণ সম্পদের হিসাব। কাউকে আইনের কাঠগড়ায় দাঁড় করানো হয়নি। পতিত সরকারের সময়ে যেসকল প্রকৌশলী নিজ অফিসে একচ্ছত্র নিয়ন্ত্রণ এবং তাদের পছন্দের ঠিকাদারকে কাজ দিয়ে কমিশন বাণিজ্য করেছেন তারা এখনো বীরদর্পে আছেন।