প্রকাশিত: অক্টোবর ১২, ২০২৫
বিশেষ প্রতিনিধি ঃ
গনপূর্ত অধিদপ্তরের প্রধান প্রকৌশলী ভারতের ( মুর্শিদাবাদ জঙ্গালীয়া থানায় জন্ম ) লোক বলেই ফ্যাসিবাদ সরকার শেখ হাসিনার আস্তাভাজন বিশ্বস্ত লোক। যার ফলে জুলাই-আগস্ট গণঅভ্যুত্থানে ছাত্র-জনতা হত্যা মামলার আসামি গণপূর্ত অধিদপ্তরের ১৬ প্রকৌশলী এখনও নিরাপদে। এ ছাড়াও অধিদপ্তরে স্বৈরাচারি আওয়ামী লীগ সরকারের শতাধীক মানুষরূপে পোষা হায়না সুবিধাভোগী বিএসসি ও ডিপ্লমা প্রকৌশলীর সিন্ডিকেট বহাল তবিয়তে।এইসব সিন্ডিকেট বীরদমে দপ্তরে চলাফেরা করছে। স্বৈরাচারি সরকারের দোষর ঠিকাদার ও নেতা কর্মী সদস্যদের, আ-লীগের সাংবাদিকদের বিভিন্ন ঠিকাদারী, বদলীর, পদন্নোতির কাজ করে দেওয়াসহ কর্মচারি নিয়োগে প্রধান প্রকৌশলী ও তার ষ্টাফ অফিসার আজমলকে তাদের সাথে যুক্তি পরামর্শ করতে দেখা গেছে।জুলাইর হত্যা মামলার আসামির কারো কারো নামে হাজারো কোটি টাকার অবৈধ সম্পদ, ব্যাংক ব্যালেন্স, দুর্নীতির অভিযোগ দুর্নীতি দমন কমিশনে দাখিল রয়েছে। হত্যা ও দুর্নীতিতে অভিযোগ থাকার পরও তাদের চালচলন সেই স্বৈরাচারি সরকারের আমলের মতই সন্ত্রাসী কায়দায় রয়ে গেছে।জুলাইর “২৪ এর গণ আন্দোলনে যে শত শত ছাত্র জনতার মৃত্যু হয়েছে এ ব্যাপারে তাদের ভিতরে বিন্দুমাত্র চিন্তার সাফ দেখা যায় না।তারা এত ছাত্র জনতার অকাল মৃত্যু হলো এ জন্যও অনুতপ্ত নয়।সরকার পরিবর্তন হয়েছে , তাদের বিরুদ্ধে কোন ব্যবস্থা নিতে পারে এমনও কিছু মনে করেন না।দিব্বি তারা ঠিকাদারী করছে, পার্শেন্টটিস নিচ্ছে, দল পাকিয়ে আড্ডা দিচ্ছে। ইচ্ছামত অফিসে আসছে যাচ্ছে।আর তাদেরকে সহযোগিতা করছে ফ্যাসিবাদ সরকারের পোষা মাফিয়া ডন প্রধান প্রকৌশলী । প্রধান প্রকৌশলী শামীম আকতার নানান ধরনের বুদ্ধি কৌশল খুঁঝছেন কোন নীতিমালায় আসামিদের মামলা থেকে খালাস করা যায়।শেখ হাসিনার খাঁটি লোক হওয়ায় শামীম আকতার নিজস্ব দলের বঙ্গবন্ধু পরিষদের কর্মী নেতাদের অন্তর দিয়ে ভালোবাসে। যার ফলে কয়েকজনকে ঢাকার বাইরে বদলি করে দিয়েছে। কিন্তু দুর্নীতিবাজরা ঢাকার বাইরে বদলী থাকলেও তাদের প্রায়ই ষ্টাফ অফিসারের কক্ষে বসা দেখা যায়। তারা ঢাকার বাইরে থাকার অভ্যস্ত নয় বিধায় কর্মস্থল ফেলে ঢাকায়ই তারা বসে বসে অফিস করছেন্। ফ্যাসিবাদ সরকারের আমলে বেশিরভাগেই তারা কাজে ফাঁকি দিয়েছে্ সেই অভ্যাস পরিবর্তন করতে তারা পারেনি। তারা প্রকল্পের বান্ডিল বান্ডিল টাকা অহেতুকভাবে খরচ করেছে, বিদেশ ভ্রামন করছে। আনন্দ স্ফুর্তী করেছে তাদের টাকার কোন অভাব ছিল না। যা দপ্তরে বলতেন তা-ই হইতো। প্রকল্পের কাজের টাকা নিজস্ব কাজে বেশিরভাগ খরচ করতো। যার ফলে কোনোভাবে কাজে রডের স্থানে বাঁশ,সুপারি গাছ দিয়ে ডালাই, পিলার করতো। এরপরও কাজ উঠাতে অতিরিক্ত একটা চাহিদাপত্র তৈরী করে টাকার ঘাটতি মিটাতো। এখনতো আর সেই সময় বা সেই ধরনের বিল করা একটু কঠিন হয়ে পরায় তাই তারা কাজে মন দেয় না। তবে উল্লেখিত মামলার ব্যপারে সরকারের দ্রুত ব্যবস্তা নিয়ে অধিদপ্তরে চাকরির শৃঙ্খলা বিধি ফিরিয়ে আনা উচিত।
মামলার কাগজপত্র ঘেঁটে দেখা গেল ছাত্র-জনতা হত্যা মামলার ১৫আসামি গনপূর্ত অধিদপ্তরের প্রকৌশলী। আর ০১ জন জাতীয় গৃহায়ন কর্তৃপক্ষের। মামলার সবাই বঙ্গবন্ধু পরিষদের সদস্য ।
ঢাকা মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে গত ৩১ অক্টোবর জনৈক ব্যক্তি হত্যা মামলা দায়ের করার আবেদন করেন। মেট্রোপলিটন ম্যজিস্ট্রেট পল্টন মডেল থানাকে অভিযুক্ত ব্যক্তিদের একইরকম আরো হত্যা মামলা আছে কিনা তা কোর্টকে গত ৪ নভেম্বরের মধ্যে জানানোর আদেশ দেয়। আদেশ দিয়ে ৮৭৪/২০২৪ (পল্টন) নম্বরে আবেদনটি হত্যা মামলায় রুপান্তর করে কোর্ট। আদেশ অনুযায়ী পল্টন মডেল থানা থেকে প্রতিবেদন পাঠানো হয়। যাতে উল্লেখ করে পল্টন মডেল থানায় গত ২৯ অক্টোবর মো. জামাল মিয়া বাদী হয়ে একই ব্যাক্তিদের বিরুদ্ধে একই বিষয়ে একটি হত্যা মামলা করেছেন। যার মামলা নম্বর- ৪৮ ধারা: ৩০২/৩৪ দন্ডবিধি।বাড্ডা থানার মামলা নং – ০৬ তাং০৩/০৩/২০২৫।ধারা১৪৭/১৪৮/৩২৬/৩০৭/৫০৬/৩৪ দন্ডবিধি।
হত্যা মামলার নথি পত্রে গণপূর্ত অধিদপ্তরের প্রধান প্রকৌশলী মো. শামীম আখতারসহ ৪ জন অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী, ৪ জন তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী, ৬ জন নির্বাহী প্রকৌশলী ও জাতীয় গৃহায়ন কর্তৃপক্ষের ১ জন নির্বাহী প্রকৌশলীর নাম আছে। প্রত্যেকেই সাবেক গণপূর্ত ও গৃহায়ন মন্ত্রী মুক্তাদির চৌধুরী ও সাবেক গণপূর্ত ও গৃহায়ন প্রতিমন্ত্রী শরীফ আহমেদের একান্ত কাছের লোক ছিলেন। তাদের নির্দেশেই প্রকৌশলীরা আওয়ামী লীগ, যুবলীগ, ছাত্রলীগের কর্মীদের দেশের ক্রান্তিকালে বিপুল পরিমাণ অর্থ যোগান দিয়েছিলেন জুলাইয়ের নির্মম ছাত্র-জনতা হত্যাযজ্ঞে।
হত্যা মামলায় আসামী প্রকৌশলীরা হলেন ঃ
গণপূর্ত অধিদপ্তরের প্রধান প্রকৌশলী মো. শামীম আখতার, অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী মোসলেহ উদ্দিন আহাম্মেদ, ইতিমধ্যে এলপি আর ”এ গেছেন। অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী মো. সামছুদ্দোহা, অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী মো. শহিদুল আলম, অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী মো. আলমগীর হোসেন, তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী সতী নাথ বাসক, তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী মো. ইলিয়াস আহম্মেদ, তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী মুহাম্মদ জাকির হোসেন, তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী মো. মনিরুল ইসলাম, নির্বাহী প্রকৌশলী মো. আহসান হাবীব, নির্বাহী প্রকৌশলী মো. মাহাবুবুর রহমান, নির্বাহী প্রকৌশলী আবুল কালাম আজাদ, নির্বাহী প্রকৌশলী সমিরন মিস্ত্রি, নির্বাহী প্রকৌশলী মোস্তাফিজুর রহমান ও জাতীয় গৃহায়ন কর্তৃপক্ষের একজন।
জানা যায়, মামলার তালিকায় থাকা প্রকৌশলীরা আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে দলীয়করণ, স্বজনপ্রীতি, বিতর্কিত কর্মকাণ্ড, অনিয়ম-দুর্নীতির সামনের সারিতে ছিলেন। ছাত্র আন্দোলন দমনে অর্থদাতা হিসেবে মামলার আসামি করা হলেও তারা তা নিয়ে কোন চিন্তাযুক্ত নয়। কারন এখনও অধিদপ্তরে ও মন্ত্রনালয়ে ফ্যাসিবাদ সরকারের লোকজন বড় বড় পদে বহাল আছেন। আর সব চেয়ে বড় বিষয় হলো প্রধান প্রকৌশলীতো শেখ হাসিনার বিশ্বস্ত ওআস্তাভাজন ভারতের লোক।আর তিনি অধিদপ্তরের দায়িত্বে থাকা অবস্থায় প্রকৌশলীদের কোন ক্ষতি হবে তা কি ভাবা যায় ? যার ফলে ভালো ভালো স্থানে তাদের ঢাকার বাহিরে বদলি করেছে ও নিজ দায়িত্বে কয়েকজনকে ঢাকায় রাখছেন।
মামলার আসামি ছাড়াও পতিত সরকারের আমলে যেসব কর্মকর্তা দলবাজি করেছেন, ঠিকমত অফিস করেননি তারা আজও তেমনি ঠিকমত অফিস করেন না। অনেকে অফিসে কেবল হাজিরা দিয়ে চলে যান। এই মামলার অনেক প্রকৌশলী আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে নানা অনিয়ম-দুর্নীতি করে শত শত কোটি টাকার মালিক হয়েছেন। দেশ বিদেশে অর্থ পাঁচার করেছেন তাদের বিরুদ্ধে কোন সাস্তির ব্যবস্তা না করে সেইসব দুর্নীতিগ্রস্ত কর্মকর্তার অনেকেই বারবার পুরস্কৃত করেছেন। অনেকের বিরুদ্ধে দুর্নীতি দমন কমিশনে (দুদক) অভিযোগ জমা আছে এবং তদন্ত চলছে। অনিয়ম-দুর্নীতিসহ ছাত্র-জনতা হত্যা মামলা থেকে বাঁচতে আসামিদের অনেকেই এখন নানা তদবির-লবিং করছেন বলে জানা যায়।
সংশ্লিষ্ট সুত্র বলছে যারা বিগত সরকারের সময় সুযোগ-সুবিধা ভোগ ও দুর্নীতি-অনিয়ম করেছেন, তাদের অবশ্যই বিচার হওয়া উচিত। তারা বলছেন দেরিতে হলেও সেনাবাহিনীর মধ্যে যারা ক্ষমতার অপব্যবহার করছেন তাদের বাছাই করে সরকার আইনের আওতায় এনেছে । তেমনি উল্লেখিত মামলার আসামিদের মধ্যে যাছাই বাছাই করে অপসারণসহ একটা সুনির্দিষ্টাভাবে মন্ত্রণালয় বা অধিদপ্তরের পক্ষ থেকে ন্যায় বিচারের পদক্ষেপ নেওয়া উচিত।
এসব বিষয়ে প্রধান প্রকৌশলীকে তার মুঠো ফোনে- 01711233670 ফোন করে পাওয়া যায়নি। অপর দিকে গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের সচিব নজরুল ইসলামকে তার অফিসের নাম্বারে ফোন করে পাওয়া যানি।, ‘অভিযোগ হয়েছে। মামলা হিসেবে নথিভুক্ত হলে পরবর্তী সময়ে এটা আমরা দেখব।