৬ই সেপ্টেম্বর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ, শনিবার,রাত ৩:৪০

নির্বাহী প্রকৌশলী সাইফুজ্জামান চুন্নুর অনিয়ম ও দুর্নীতির ফাইল চাঁপা ছিল স্বৈরাচারী সরকারে আমলে ডিজিএআইর ও আমলাদের কারনে। এখন তার পিছনে কারা ???

প্রকাশিত: সেপ্টেম্বর ৫, ২০২৫

  • শেয়ার করুন

 

বিশেষ প্রতিবেদক 

নির্বাহী প্রকৌশলী সাইফুজ্জামান চুন্নুর অনিয়ম   দুর্নীতির ফাইল হিমাঘরে, স্বৈরাচারী লীগ ফ্যাসিবাদী সরকারের লোক হলেও তার বাবা তাকে বিএনপি জামায়াতের লোক হওয়ার চেষ্টায় মরিয়া হয়ে ওঠেছে।

ঢাকা গণপূর্ত বিভাগ-৪-এর সাবেক নির্বাহী প্রকৌশলী বর্তমান ফরিদপুর গণপূর্তের নির্বাহী প্রকৌশলী মো.সাইফুজ্জামান চুন্নু। তিনি গোটা আওয়ামী লীগ আমলে সাবেক গণপূর্ত প্রতিমন্ত্রীর নিজস্ব বলয়ে গড়ে তুলেছেন দুর্নীতির সাম্রাজ্য।মোঃ সাইফুজ্জামান চুন্নুর নিজ এলাকা পটুয়াখালিতে গড়ে তুলেছেন অবৈধ সম্পদের পাহাড়।

নাহিয়ান ব্রীকস ফিল্ড, পটুয়াখালি কলেজ রোডে দু’তলা বাড়ী, পটুয়াখালি সদর উপজেলার কমলাপুর ইউনিয়নের দক্ষিণ ধারান্দি গ্রামে ৫ একর জমি, পটুয়াখালিতে নেক্সাস নামে একটি গামেন্টস এর শোরুম, সাভারে ১০ কাঠার একটি প্লট, ঢাকা ধানন্ডির সেন্ট্রাল রোডে একটি ফ্ল্যাট, বেইলী রোডে একটি ফ্ল্যাট, এছাড়াও রয়েছে নামে বেনামে প্রচুর সম্পদ।

তিনি গণপূর্ত অধিদপ্তরের মিরপুর গণপূর্ত বিভাগে এমন কোনো দুর্নীতি বা অনিয়ম নেই যা তিনি করেননি। সাইফুজ্জামান চুন্নু সাবেক গনপূর্ত প্রতিমন্ত্রীর কাছের লোক দাবি করায় কেউ তার বিরুদ্ধে কোনো শব্দ করতেন না। বর্তমানে তিনি গনপূর্ত উপদেষ্টা , সচিব ও প্রধান প্রকৌশলীর আস্থাভাজন হয়ে ওঠার জন্য তৎপরতা চালাচ্ছেন।

গণপূর্ত অধিদপ্তরের মধ্যে তার নিজস্ব একটি সিন্ডিকেট রয়েছে। মূলত এ সিন্ডিকেটই সরকারের বিগত সময়ে অধিদপ্তরকে নিয়ন্ত্রন করতো। এছাড়া গণপূর্ত ঢাকা মেট্রো জোনের প্রধান নাসিম শিকদারের আস্থাভাজন হওয়ায় নির্বিচারে নানা অনিয়ম ও দুর্নীতি করে পার পেয়ে গেছেন। শুধু দুর্নীতিই নন, এমন কোনো খারাপ কাজ নেই যা তিনি করেন না।তবে  তার যারা সহযোগিতা করেছেন তারা রয়েছেন  ধরা চোয়ার বাইরে ।  চুন্নুরমত এক ডজন শীর্ষ দুর্নীতিবাজ প্রকৌশলীর   জনৈক ক্যাশিয়ারের রয়েছে কোটি কোটি টাকা। সে রয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশনের চোখের আড়ালে । ঐ কর্মচারী এখনও তার কাক্ষে বসে নতুন পুরান অনেক নির্বাহী, তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী দুর্নীতিবাজের ঝামেলা সাংবাদিক, দুদকসহ বেশ কয়েকজন গোয়েন্দা বিভাগের সাথে মিট করে থাকেন।

পটুয়াখালী প্রতিনিধি সুত্রে জানা যায়, সাইফুজ্জামান চুন্নুর স্ত্রীর নাম ডা: সাইমুন নাহার (এমবিবিএস), তিনি পটুয়াখালী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের লেকচারার। তিনি তার ভাই (চাচাত) ছাত্রদল নেতা শামীমের মাধ্যমে আর্থিক লেন দেন করেন। পটুয়াখালি যুবদলের সোহেল রানার মাধ্যমে পটুয়াখালির সবকিছু নিংন্ত্রণ করেন তিনি।

অনুসন্ধানে জানা সাইফুজ্জামান চুন্নু বেপরোয়া লুটপাট, দূর্নীতির মাধ্যমে সরকারের শতশত কোটি টাকার ক্ষতি করে বিশাল অংকের টাকার মালিক হয়েছেন। এইসব অবৈধ টাকার একটা বড় অংশ     তুলে দিচ্ছেন তার বাবার হাতে। তার বাবা আব্দুস সালাম মৃধা পটুয়াখালী সদর উপজেলা বিএনপির সহ সভাপতি সাবেক ইউপি মেম্বার।

সাবেক আওয়ামী ফ্যাসিবাদী সরকারের আমলে রাজনৈতিক কর্মকান্ড ও কর্মসূচিতে লীগের সক্রিয় সদস্য হিসাবে মাঠ কাঁপানো দুর্দান্ত নায়ক ছিলেন মো : সাইফুজ্জামান চুন্নু।

ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে  সরকার পরিবর্তন হলে চুন্নুর বাবা উপজেলা চেয়ারম্যান বা তার চেয়ে বড় কোন পদ পাওয়ার আশা করছেন। সেই সাথে  চুন্নুকে আরো গুরুত্বপূর্ণ পদে পদন্নোতি দিয়ে বড় পদে বসানোর স্বপ্ন দেখেন।  এলাকায় বিএনপি জামায়াতের লোক আব্দুস সালাম মৃধাকে টাকার গাছ হিসেবে বর্ণনা করে থাকেন। আব্দুস সালাম মৃধার টাকার উৎস তারই যে সন্তান লীগের সদস্য।

সাইফুজ্জামান চুন্নু কয়েক বছরে হয়ে যান শত কোটি টাকার মালিক। দেশে নামে বেনামে গড়েছেন অনেক সম্পদ। বিদেশে টাকা পাচার সহ বেশ কয়েকটি দেশে টাকা পাচারের অভিযোগ উঠেছে তার নামে। এ সব বিষয়ে বক্তব্য জানতে প্রকৌশলী সাইফুজ্জামান এর সাথে একাধীকবার তার মুঠোফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করেও কোন জবাব পাওয়া যায়নী। তবে এই সাইফুজ্জামান চুন্নু স্বৈরাচারী সরকারের আমলে তার দুর্নীতির বিষয়ে জানতে চাওয়া হলে  ডিজি এফআইর  ভয় দেখাতেন। তার সাথে ডিজিএফ আইর কিছু অসাধু অফিসারদের সাথে ভালো ছাগল কান্ডের মতিউরেরমত  ভালো সম্পর্ক ছিল।

সেচ্ছাসেবক লীগের নেতা হওয়ার সুবাদে মো: সাইফুজ্জামান চুন্নু কে শুভেচ্ছা ও শুভকামনা জানিয়ে দেওয়া সেই ফেসবুক পোস্ট।

সূত্রমতে,গণপূর্ত অধিদপ্তরের মিরপুর ডিভিশনের পূর্ত সার্কেলে আইভি বাংলো তৈরির সরকারি অর্থ আত্মসাতের অভিযোগ পাওয়া যায়। গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রনালয়ের যুগ্মসচিব মুহাম্মদ সোহেল হাসান স্বাক্ষরিত এক চিঠিতে এ তথ্য জানা যায়।

চিঠির স্মারক নম্বর- ২৫.০০.০০০০.০৫৩.০০১.০০২.১৯.২৭১। অভিযোগটি গত ২৩ আগস্ট করা হয়। অভিযোগের বিষয়ে তদন্তপূর্বক প্রতিবেদন প্রদানের জন্য গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রনালয়ের যুগ্মসচিব মুহাম্মদ সোহেল হাসানকে দায়িত্ব প্রদান করা হয়।

জানা গেছে, গণপূর্ত অধিদপ্তরের মিরপুর ডিভিশনের পূর্ত সার্কেলে থাকাকালীন বদলি হওয়ার আগমুহূর্তে অর্থ উত্তোলন করেন সাইফুজ্জামান চুন্নু। বর্তমানে তিনি ফরিদপুর থেকে আবার ঢাকায় আসার জন্য বিএনপি ও জামায়াত নেতাদের মাধ্যমে তদবীর চালালেও ঢাকায় তাকে না দিয়ে লালমনিরহাটে বদলীর  আদেশ জারী করা হয়েছে বলে সংশ্লিষ্ট সুত্রে জানা যায়। আগামি খন্ডে পাওয়া যাবে চুন্নুর , সোহরাওয়ার্দী,  কালাম, সত্তার, ফজলুর রহমানসহ এক ডজন  দুর্নীতিবাজ প্রকৌশলীর ক্যাশিয়ারের সম্পত্তির টাকার উৎসের বিবরন। (চলবে)।

 

 

  • শেয়ার করুন