৬ই সেপ্টেম্বর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ, শনিবার,রাত ১:১০

জাবেদ ও তাঁর স্ত্রীর বিরুদ্ধে ১২০০ কোটি টাকা পাচারের মামলা

প্রকাশিত: সেপ্টেম্বর ৫, ২০২৫

  • শেয়ার করুন

সাইফুজ্জামান চৌধুরী জাবেদ, রুকমীলা জামান

 

সাবেক ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী জাবেদ ও তাঁর স্ত্রী রুকমীলা জামানের বিরুদ্ধে মামলা করেছে সিআইডি। তাদের বিরুদ্ধে সংযুক্ত আরব আমিরাতে প্রায় এক হাজার ২০০ কোটি টাকা পাচারের অভিযোগ রয়েছে। গতকাল বৃহস্পতিবার চট্টগ্রামের কোতোয়ালি থানায় মানিলন্ডারিং প্রতিরোধ আইনে মামলাটি করা হয় বলে জানান সিআইডির মুখপাত্র বিশেষ পুলিশ সুপার জসিম উদ্দীন খান।

এজাহারে বলা হয়েছে, পাচার করা অর্থ দিয়ে দুবাইয়ে ২২৬টি ফ্ল্যাট কেনার পাশাপাশি বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান, স্থাপনা ও ব্যবসায় বিনিয়োগ করেছেন তারা। এজাহারে অজ্ঞাতনামা ৬-৭ জনকে আসামি করা হয়েছে। আরব আমিরাত ছাড়াও যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্যে অর্থ পাচার করে সম্পদ কিনেছেন বলে মামলায় উল্লেখ করা হয়েছে।

ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী ইউনাইটেড কমার্শিয়াল ব্যাংকের নির্বাহী কমিটির চেয়ারম্যান ছিলেন। শিল্পপ্রতিষ্ঠান আরামিট গ্রুপের চেয়ারম্যান হিসেবেও তিনি দায়িত্ব পালন করেছেন। চট্টগ্রাম চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির তিনবারের সভাপতি ছিলেন।

সিআইডির ভাষ্য, অনুসন্ধানের সময় পাওয়া তথ্য-উপাত্ত পর্যালোচনায় দেখা যায়, সাইফুজ্জামান চৌধুরী ২০১৬ থেকে ২০২৩ সাল পর্যন্ত সংযুক্ত আরব আমিরাতের আল বর্ষা দক্ষিণ তৃতীয়, বারশা দক্ষিণ, বারশা দক্ষিণ ৪, থানিয়া পঞ্চম, জাদ্দাফ, হাইবা ষষ্ঠ, উপসাগরীয় বাণিজ্যিক, খায়রান, ইয়ালায়েস ২, বুর্জ খলিফা, জাবাল আলী, ওয়ার্ল্ড আইল্যান্ড, জাবেল দ্বিতীয়, মার্সা দুবাই, মে’আইসেম প্রথম, নাদ আল শেবা প্রথম, ওয়াদি আল সাফা তিনসহ বিভিন্ন স্থানে ২২৬টি ফ্ল্যাট কেনেন। ফ্ল্যাটগুলোর দাম ৩৩ কোটি ৫৬ লাখ ৫৭ হাজার ১৬৮ দিরহাম।

এ ছাড়া তাঁর স্ত্রী রুকমীলা জামানের নামে দুবাইয়ের আল বারশা দক্ষিণ তৃতীয় এলাকায় কিউ গার্ডেনস বুটিক রেসিডেন্সেস-ব্লক বি নামে দুটি সম্পত্তির তথ্য পাওয়া যায়। সেটির দাম ২২ লাখ ৫০ হাজার ৩৬৯ দিরহাম। এ ছাড়া সাইফুজ্জামান চৌধুরীর নামে ও তাঁর স্বার্থসংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের নামে দুবাই ইসলামী ব্যাংক, জনতা ব্যাংক ও ফার্স্ট আবুধাবি ব্যাংকের দুটি হিসাবসহ মোট চারটি ব্যাংক হিসাবের তথ্য পাওয়া যায়। হিসাবগুলোয় বিভিন্ন অঙ্কের দিরহাম ও ডলারের লেনদেনসংক্রান্ত তথ্য পাওয়া যায়। তৎকালীন সময়ের মুদ্রার বিনিময় হার অনুযায়ী তা প্রায় ৩১১ কোটি ২৬ লাখ ৬ হাজার ৭৯৫ টাকা।

সাইফুজ্জামান চৌধুরী ও রুকমীলা জামান এবং তাদের স্বার্থসংশ্লিষ্ট অজ্ঞাত ব্যক্তিদের পারস্পরিক যোগসাজশে সংযুক্ত আরব আমিরাতের রাস আল খাইমাহ অর্থনৈতিক অঞ্চলের অনুমতিক্রমে বিল্ডিং অ্যান্ড কন্সট্রাকশন ম্যাটারিয়াল প্রোডাক্ট ব্যবসার জন্য জেবা ট্রেডিং এফজেডই এবং কম্পিউটার সফটওয়্যার ব্যবসার জন্য দ্রুত ল্যাপ্টর এফজেডই নামে দুটি ব্যবসায় প্রতিষ্ঠান স্থাপন, বিনিয়োগ ও পরিচালনার তথ্য পাওয়া যায়।

বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে প্রাপ্ত রেকর্ডপত্র পর্যালোচনায় জানা যায়, বিদেশে কোম্পানি নিবন্ধন, বিনিয়োগ ও সম্পত্তি অর্জনের নিমিত্তে সাইফুজ্জামান চৌধুরীর অনুকূলে সরকার কোনো অনুমতি দেয়নি। এভাবে তিনি বিদেশে সম্পত্তি ক্রয়, কোম্পানি নিবন্ধন এবং ব্যাংক হিসাবে অর্থ জমা করার মাধ্যমে প্রায় এক হাজার ২০০ কোটি টাকা সংযুক্ত আরব আমিরাতে পাচার করেছেন।

  • শেয়ার করুন