প্রকাশিত: নভেম্বর ১৬, ২০২৫

বিশেষ সংবাদদাতা ঃ
গণপূর্তের শীর্ষ দুর্নীতিবাজ প্রকৌশলীরা ফ্যাসিবাদ আওয়ামী লীগ সরকাররের বিগত ১৬ বছরের গুম ,খুন ও নির্যাতনের সাথে সহযোগিতাসহ জনবল, সন্ত্রাসী ও অবৈধ অর্থ যোগান দিয়ে নিজেরা অবৈধভাবে ঠিকাদারী করা, দুর্নীতি ও বিদেশভ্রমনসহ নানান ধরনের সুযোগ সুবিধা নিয়েছেন।তারা বিদেশেতে বাড়ী গাড়ী ও ব্যাংকব্যালেন্সসহ স্থায়ী ঠিকানা গড়েছেন। তা ঠিক রাখার জন্য ছাত্র জনতার গণঅভ্যুত্থান ২০২৪“ কে নস্যাৎ করার ছক ও নগদ অর্থ দিয়ে স্বৈরাচারি সরকারের সাথে তাল মিলিয়ে স্লোগান দিয়েছে। ছাত্র জনতার আন্দোলনকে ধুলায় মিসিয়ে দেয়ার জন্য গণপূর্তের দপ্তরে ও দপ্তরের বাহিরে তারা গোপন মিটিং করে নানান ষড়যন্ত্র করেছে বলেও অভিযোগ ছিল। শীর্ষ দুর্নীতিবাজ ১৫ প্রকৌশলীর সাথে আরও শতাধীক বিএসসি ও ডিপ্লোমা প্রকৌশলী দোষররা আন্দোলনের সময় নগদ অর্থ ও সরাসরি সরকারি সন্ত্রাসীদের সাথে যোগ দিয়ে প্রতিবাদী ছাত্র জনতার উপর নির্যাতন ও হত্যা করেছে । যার ফলে তাদের নামে রাজধানীর ৪ টি থানায় হত্যা ও নির্যাতনের মামলা হয়েছে। কিন্তু তারা এতই শক্তিশালী ও কলকৌশলদাতা যে আজ ১৬ মাস প্রায় তারা ধরা-ছোঁয়ার বাইরে প্রকাশ্যে ঘুরে বেড়াচ্ছে ?
বিগত আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে গুমের মামলা এবং অপরটি ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থান চলাকানীন রামপুরা এলাকায় গুলি করে মানুষ হত্যার মামলায় জড়িত বলে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে হাজির করা ১৫ জন সেনা কর্মকর্তাকে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। আদেশ দিয়েছেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল।অথচ গণপূর্তের ১৬ প্রকৌশলীর নামে রাজধানীর ৪ টি থানায় মামলা থাকার পরও তাদের কাউকে গ্রেফতার বা সাময়িক বরখাস্তও করা হয়নি।এর কারন কি , রহস্য নিয়ে সারা বাংলায় ও গণপূর্তের মাঝে কানাগুসা শুরু হয়েছে।কারন মামলার আসামি প্রকৌশলীদের মাঝে কোন রকম চিন্তা নেই বরং বলেন ওসব মামলা মিথ্যা। এই মামলার প্রকৌশলীরা সকলেই আওয়ামীলীগ সরকারের সাথে ওতপরোতোভাবে জড়িত ছিল। তারা আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে নানা অনিয়ম-দুর্নীতি করে শত শত কোটি টাকার মালিক হয়েছেন। দেশ বিদেশে অর্থ পাচার করেছেন তাদের বিরুদ্ধে কোন শাস্তির ব্যবস্থা না হওয়ার কারন কি ?তারা অনেকে স্ত্রী-পুত্র নিয়ে বিদেশে পালিয়ে গেছে। তারপরও ঐসব দুর্নীতিগ্রস্ত কর্মকর্তার অনেককে বারবার বড় বড় প্রকল্পে বদলী করেছেন।অনেকের বিরুদ্ধে দুর্নীতি দমন কমিশনে (দুদক) একাধীক অভিযোগের তদন্ত থাকলেও তারা তা পাত্তা দিচ্ছে না। তাদের সন্ত্রাসী, লুট তরাজ এবং দুর্নীতি কোনটারই বিন্দুমাত্র পরিবর্তন হয়নি।তারা রীতিমত দুর্নীতি, কাজে ফাকি সবই অব্যহত রেখে ইচ্ছামত চলাফেরা করছে।অপর দিকে সাবেক প্রধান প্রকৌশলী শামীম আখতার অন্তবর্তী কালীন সরকারের বিপক্ষে থেকে আওয়ামীলীগের দোষর, যারা মামলায় পরেছে তাদের পক্ষেমামলার তদ্বীর করেছে । দুর্নীতিবাজ ও সন্ত্রাসী প্রকৌশলীরা আসলে প্রকৃত সরকারি চাকরি জীবী না। তারা চাকরির বিধিমালা লঙ্গন করে আওয়ামীলীগের চামচামি ও সন্ত্রাসী করে একতরফাভাবে বড় বড় প্রকল্পগুলি দখলে নিয়া লুটতরাজ করেছে। তারা তাদের লীগের সাপোর্ট প্রকৌশলীদের কিছুটা প্রকল্পের কাজ দেওয়া ছাড়া অন্যদের দিত না।লীগ পন্থিরা বেশকিছু প্রকৌশলীদৈর একটা সাইট করে দিয়েছিল। এই লীগ পন্থিরা সুধু প্রকৌশলীদের সাইট করেই থেমে রয়নি তারা স্বাধীনভাবে ইচ্ছামত অনিয়ম দুর্নীতি করেছে। বড় বড় প্রকল্পগুলির বার বার সময় বৃদ্ধি, টাকা বৃদ্ধি করে সরকারের কোটি কোটি টাকা আত্নসাৎ করে বিদেশে পাচার করেছে। খুব আনন্দে নিরাপদে তারা দেশ বিদেশে ঘুরে বেড়াতো।সুধু ঘুরেই ক্ষ্যান্ত হয়নি দেশের ভিতরেই তারা তাদের গ্রামের বাড়ীতে গেলেওে উড়জাহাজে করে যেত।একজন ডিপ্লোমা প্রকৌশলীর বেতন ভাতা কত ?
সরকার পরিবর্তন হওয়ার পরও সাবেক প্রধান প্রকৌশলী শামীম আখতার তাদের হত্য মামলা থেকে বাঁচানোর জন্য সুধু এক স্থান থেকে অন্য স্থানে অর্থাৎ এক জেলা থেকে অন্য জেলা দপ্তরে বদলী করেছে।তাও বড় বড় প্রকল্পের কাজগুলির দায়িত্ব তাদের দিয়েছে বলে অভিযোগ ওঠেছে ।তবে সম্প্রতি যোগদানকারি প্রধান প্রকৌশলী খালেকুজ্জামান কি করবেন সেদিকে এখন নজর রয়েছে ছাত্র-জনতাসহ অনেক রাজনৈতিক নেতাদের।এ নিয়ে জনসাধারনের ও প্রকৌশলীদের মাঝেও নানান প্রশ্নবিদ্ধ হচ্ছে।
প্রকৌশলীদের বিরুদ্ধে প্রথম হত্যা মামলা করা হয় রামপুরা থানায়। এরপর সাভার ও পল্টন এবং বাড্ডা থানায়। কোনো কোনো প্রকৌশলীকে একাধিক থানায় হত্যা মামলার আসামি করা হয়েছে। মামলার আসামিরা হলেন গণপূর্ত অধিদপ্তরের প্রধান প্রকৌশলী মো. শামীম আক্তার, অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী (ঢাকা জোন) মো. শামছুদ্দোহা, অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী (গণপূর্ত ভবন) মো. শহিদুল ইসলাম, অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী মো. আলমগীর হোসেন, জাতীয় গৃহায়নের অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী মোসলেহ উদ্দিন আহাম্মাদ অবসরে গেছেন, গণপূর্ত অধিদপ্তরের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. আহসান হাবীব, নির্বাহী প্রকৌশলী মো. মাহাবুব রহমান, তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী মো. ইলিয়াস আহম্মেদ, তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী মোহাম্মাদ মনিরুল ইসলাম, তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী সতী নাথ বসাক, মুহাম্মাদ জাকির হোসেন, নির্বাহী প্রকৌশলী আবুল কালাম আজাদ, নির্বাহী প্রকৌশলী সমিরন মিস্ত্রি, নির্বাহী প্রকৌশলী মোস্তাফিজুর রহমান। নির্বাহী প্রকৌশলী মো. সাইফুজ্জামান চুন্নুর নামে রামপুরা ও বাড্ডা থানায় মামলা রয়েছে। নির্বাহী প্রকৌশলী আমানউল্লাহ আমানও মামলার আসামি।
উল্লেখিত নামধারী প্রকৌশলীরা আওয়ামী লীগ, যুবলীগ, ছাত্রলীগের কর্মীদের দেশের ক্রান্তিকালে বিপুল পরিমাণ অর্থ যোগান দিয়েছিলেন জুলাইয়ের নির্মম ছাত্র-জনতা হত্যাযজ্ঞে।
অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী (ঢাকা জোন) মো. শামছুদ্দোহা মিরপুর, আজিমপুর ও নারায়ণগঞ্জে আবাসিক ভবন নির্মাণের দায়িত্বে আছেন। সাভার ও সার্কেল-৪ দেখভাল করেন অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী (গণপূর্ত ভবন) মো. শহিদুল ইসলাম। প্রধান প্রকৌশলীর সব কাজ করে থাকেন তিনি। অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী মো. আলমগীর হোসেন ঢাকা ১, ২ ও ৩ সংসদ ভবন, সচিবালয়, ঢাকা মেডিকেল, হাইকোর্ট ভবন নির্মাণসহ সারা দেশে ইলেকট্রনিক ও মেকানিক্যাল কাজের দায়িত্ব পালন করছেন। জাতীয় গৃহায়ন কর্তৃপক্ষের অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী মোসলেহ উদ্দিন আহাম্মাদ বর্তমানে অবসর পালন করছেন।
তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী সতী নাথ বসাক সচিবালয় ২০ তলা ভবন, মুগদা হাসপাতাল ভবন নির্মাণ, মিল ব্যারাক পুলিশ লাইনে ভবন নির্মাণের দায়িত্ব পালন করছেন। আলোচিত জিকে শামীমসহ ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে সখ্যর বিভিন্ন অনিয়মের কারণে তাকে এসব প্রকল্প কাজ থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে। এখন তিনি রিজার্ভে আছেন।
প্রকৌশলী আসামিদের মধ্যে বড় বড় প্রকল্পের দায়িত্ব পালন করছেন প্রায় সবাই। এখনো কেউ কেউ দায়িত্বে রয়েছেন। এর মধ্যে তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী মো. ইলিয়াস আহম্মেদের নামে হত্যার অভিযোগসহ বিভিন্ন অনিয়ম করার কারণে ঢাকা থেকে সিলেট বদলি করা হয়েছে। সিলেট ও হবিগঞ্জে দুটি ক্যান্সার হাসপাতাল নির্মাণে প্রায় ৪০০ কোটি টাকার প্রকল্প উন্নয়ন ও সংস্কার কাজের দায়িত্ব পালন করছেন তিনি। এর আগে তিনি প্রায় ৩ হাজার কোটি টাকার কাজ বাস্তবায়ন করেছেন। টানা পাঁচ বছরেরও বেশি সময় দায়িত্ব পালন করেছেন একই কর্মস্থলে। গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ে যখন যিনিই মন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন, তার সঙ্গেই দহরম মহরম সম্পর্ক গড়ে তুলতেন ইলিয়াস।
তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী মোহাম্মাদ মনিরুল ইসলাম (সার্কেল-১) নিউরো সায়েন্স, ক্যান্সার হাসপাতাল নির্মাণকাজের দায়িত্বে ছিলেন। বর্তমানে তিনি প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়, ঢাকা অফিসার্স ক্লাব প্রকল্প, পুলিশ লাইন, মন্ত্রীপাড়া, বঙ্গভবন উন্নয়ন কাজের দায়িত্ব পালন করছেন।
সাভারে জিন ব্যাংক নির্মাণ, জাতীয় স্মৃতিসৌধ, বেতার, নারায়ণগঞ্জ উন্নয়ন ও সংস্কার কাজ করেছেন নির্বাহী প্রকৌশলী মো. আহসান হাবীব। বর্তমানে তিনি আইসিবি ভবন নির্মাণ, রাজারবাগ পুলিশ লাইন্স, বিচারপতির বাসভবন উন্নয়ন ও সংস্কার কাজের দায়িত্বে আছেন।
সংশ্লিষ্ট সুত্র বলছে যারা বিগত সরকারের সময় সুযোগ-সুবিধা ভোগ ও দুর্নীতি-অনিয়ম করেছেন, তাদের অবশ্যই বিচার হওয়া উচিত। তারা বলছেন দেরিতে হলেও সেনাবাহিনীর মধ্যে যারা ক্ষমতার অপব্যবহার করছেন তাদের বাছাই করে সরকার আইনের আওতায় এনেছে । তেমনি প্রকৌশলীদের মধ্যে যাছাই বাছাই করে অপসারণসহ একটা সুনির্দিষ্টাভাবে মন্ত্রণালয় বা অধিদপ্তরের পক্ষ থেকে ন্যায় বিচারের পদক্ষেপ নেওয়া উচিত।