৬ই সেপ্টেম্বর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ, শনিবার,রাত ১:০৫

“বিএনপি নেতা এম সাইফুর রহমানের ১৬তম মৃত্যুবার্ষিকী আজ”

প্রকাশিত: সেপ্টেম্বর ৫, ২০২৫

  • শেয়ার করুন

 

নিজস্ব  প্রতিনিধিঃ 

সাবেক অর্থ ও পরিকল্পনামন্ত্রী, বিএনপি নেতা এম সাইফুর রহমানের ১৬তম মৃত্যুবার্ষিকী আজ (৫ সেপ্টেম্বর)। ২০০৯ সালের এই দিনে এক মর্মান্তিক সড়ক দুর্ঘটনায় তিনি নিহত হন।

‎সাইফুর রহমানের মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে বাংলাদেশ মফস্বল সাংবাদিক এসোসিয়েশন এর মহাসচিব মৌলভীবাজার জেলার কৃতি সন্তান শেখ মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম বলেন, দেশের স্বনামধন্য সাবেক অর্থ ও পরিকল্পনা মন্ত্রী, বরেণ্য রাজনীতিবিদ এম সাইফুর রহমানের ১৬তম মৃত্যুবার্ষিকীতে আমি তার আত্মার প্রতি জানাই গভীর শ্রদ্ধা। বাংলাদেশের রাজনীতিতে এম সাইফুর রহমানের কৃতিত্ব সর্বজনবিদিত। দেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব সুরক্ষা এবং জনগণের গণতান্ত্রিক অধিকার প্রতিষ্ঠার সংগ্রামে তিনি সবসময় অগ্রণী ভূমিকা পালন করেছেন।

‎সাইফুর রহমান একজন কীর্তিমান অর্থমন্ত্রী হিসেবে দেশের অর্থনৈতিক সমৃদ্ধিতে যুগান্তকারী অবদান রেখেছেন উল্লেখ করে মফস্বল সাংবাদিক মহাসচিব বলেন, তার দক্ষ রাষ্ট্রীয় অর্থনৈতিক ব্যবস্থাপনায় বাংলাদেশ আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে প্রভূত সুনাম অর্জন করে। তিনি স্বদেশের উন্নয়ন ও অগ্রগতির অন্যতম পথিকৃৎ।

‎এম সাইফুর রহমান বাণিজ্যমন্ত্রী, পরিকল্পনামন্ত্রী ও একাধিকবার অর্থমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করেছেন। তার রাজনৈতিক জীবন শুরু হয় ১৯৭৬ সালে জিয়াউর রহমান সরকারের বাণিজ্য উপদেষ্টা হিসেবে। তিনি ১৯৭৯ সালে মৌলভীবাজার-৩ আসন থেকে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। ১৯৯৬ সালে ষষ্ঠ ও সপ্তম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে মৌলভীবাজার-৩ আসন এবং ২০০১ সালে অষ্টম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে মৌলভীবাজার-৩ ও সিলেট-১ আসন থেকে নির্বাচিত হন। অর্থমন্ত্রী হিসেবে সংসদে ১২ বার বাজেট উপস্থাপনের রেকর্ড রয়েছে তার।

‎১৯৩২ সালের ৬ অক্টোবর মৌলভীবাজারের বাহারমর্দনে জন্মগ্রহণ করেন এম সাইফুর রহমান। তার বাবার নাম মোহাম্মদ আবদুল বাছিরন ও মায়ের নাম তালেবুন নেছা। তিন ভাইয়ের মধ্যে সবার বড় ছিলেন সাইফুর রহমান। শিক্ষাজীবন, গ্রামের মক্তব ও পাঠশালা শেষ করে তিনি ১৯৪০ সালে জগৎসী গোপালকৃষ্ণ উচ্চ ইংরেজি বিদ্যালয়ে ভর্তি হন। এরপর ১৯৪৯ সালে কৃতিত্বের সঙ্গে ম্যাট্রিকুলেশনে উত্তীর্ণ হন। সিলেটের এমসি কলেজ থেকে আইকম পাস করে ১৯৫১ সালে তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হন। ১৯৫৩ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে গ্র্যাজুয়েশন ডিগ্রি অর্জন করেন। এরপর তিনি ব্যারিস্টারি পড়ার জন্য লন্ডনে চলে যান। সেখানে পৌঁছানোর পর মত পাল্টে যায় তার। ব্যারিস্টারির পরিবর্তে পড়েন চার্টার্ড অ্যাকাউন্ট্যান্সি। ১৯৫৩ থেকে ১৯৫৮ সাল পর্যন্ত পড়াশোনার পর ১৯৫৯ সালে ইনস্টিটিউট অব চার্টার্ড অ্যাকাউন্ট্যান্টস ইংল্যান্ড অ্যান্ড ওয়েলস ফেলোশিপ অর্জন করেন সাইফুর রহমান। এ ছাড়া তিনি আর্থিক ও মুদ্রানীতি এবং উন্নয়ন অর্থনীতিতে বিশেষায়িত শিক্ষা গ্রহণ করেন।

‎বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল বিএনপির প্রতিষ্ঠালগ্নে দলটির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমানের ডাকে সাড়া দিয়ে দল গঠনে অংশ নিয়ে দেশ ও জাতির কল্যাণে নিবেদিত হন সাইফুর রহমান। ১৯৯৬ সালে ষষ্ঠ ও সপ্তম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে মৌলভীবাজার-৩ আসন ও ২০০১ সালের অষ্টম সংসদ নির্বাচনে মৌলভীবাজার-৩ ও সিলেট-১ আসন থেকে বিপুল ভোটে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন তিনি। ২০০৬ সালের ৮ জুন তিনি সংসদে দ্বাদশ বাজেট পেশ করে দেশের সংসদীয় ইতিহাসে সর্বাধিক সংখ্যক বাজেট পেশকারী হিসেবে রেকর্ড গড়েন। তিনি দীর্ঘদিন দেশের অর্থমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন ছাড়াও দেশ-বিদেশের স্বার্থসংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানগুলোতেও নানা গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালন করেছেন।

‎২০০৯ সালের ৫ সেপ্টেম্বর মৌলভীবাজারের নিজ বাড়ি বাহারমর্দন থেকে ঢাকায় যাওয়ার সময় ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের খড়িয়ালা নামক স্থানে এক মর্মান্তিক সড়ক দুর্ঘটনায় তিনি নিহত হন।

  • শেয়ার করুন