৫ই সেপ্টেম্বর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ, শুক্রবার,দুপুর ১:৫৪

আওয়ামী লীগ নেতা শিক্ষক হওয়ায়, পলাতক থেকেও বছর ধরে বেতন তুলছেন

প্রকাশিত: সেপ্টেম্বর ৩, ২০২৫

  • শেয়ার করুন

 

জয়পুরহাট প্রতিনিধিঃ

জয়পুরহাটের কালাই উপজেলার আওয়ামীলীগের নেতা মোলামগাড়ীহাট বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক রফিকুল ইসলাম। গত এক বছর ধরে শ্রেণিকক্ষে অনুপস্থিত থেকেও নিয়মিতভাবে সরকারি বেতন-ভাতা তোলার অভিযোগ উঠেছে এ নেতার বিরুদ্ধে। শুধু তাই নয়, তার বিরুদ্ধে হত্যা ও হত্যাচেষ্টার একাধিক মামলা চলমান রয়েছে। তিনি গত বছরের ৫ই আগস্ট থেকে পলাতক রয়েছেন। প্রধান শিক্ষকের সহযোগিতায় বিগত দিন যাবত সরকারি বেতন ভাতা তুলে নিচ্ছে।

রফিকুল ইসলাম জিন্দারপুর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি এবং জেলা পরিষদের সদস্য। রাজনৈতিকভাবে প্রভাবশালী হওয়ায় দীর্ঘদিন ধরেই তিনি বিদ্যালয়ে অনিয়মিত ছিলেন। বিদ্যালয়টির একাধিক শিক্ষক জানান, মামলার পর পলাতক থাকলেও প্রধান শিক্ষক মোসাদ্দেক হোসেনের সহায়তায় তিনি স্বাভাবিক বেতন-ভাতা ও অন্যান্য সরকারি সুযোগ-সুবিধা ভোগ করে যাচ্ছেন। জানা যায়, গত এক বছর ধরে রফিকুলের উপস্থিতির কোনো প্রমাণ নেই। হাজিরা খাতায় তার স্বাক্ষর নেই। কোনো ক্লাস নেয়ার রেকর্ড নেই। বিদ্যালয়ের কোনো কর্মকাণ্ডেও তিনি অংশগ্রহণ করেননি। তবু তার নামে প্রায় চার লক্ষাধিক টাকার বেশি বেতন-ভাতা উত্তোলন করা হয়েছে।

প্রধান শিক্ষক মো. মোসাদ্দেক হোসেন অভিযোগ স্বীকার করে বলেন, রফিকুল ইসলামের পরিবর্তে পরিচালনা কমিটির সিদ্ধান্তে একজন খণ্ডকালীন শিক্ষক নিয়োগ দেয়া হয়েছে। রফিকুল বেতন সেই ব্যক্তিকে দিয়ে থাকেন। এখন থেকে তার বেতন উত্তোলনের সুযোগ বন্ধ করা হবে। তবে এই খণ্ডকালীন শিক্ষক মূলত একই বিদ্যালয়ের কারিগরি শাখায় ল্যাব এসিস্ট্যান্ট পদে কর্মরত। তার শিক্ষাগত যোগ্যতা মাত্র এসএসসি পাস। উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার কাজী মো. মনোয়ারুল হাসান বলেন, রফিকুল ইসলাম নিয়মিত বেতন-ভাতা তুলছেন, এ বিষয়ে কেউ তাকে অভিযোগ করেনি। তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে। তিনি বলেন, একজন অনুমোদিত শিক্ষকের জায়গায় খণ্ডকালীন কারো মাধ্যমে ক্লাস করানোর সুযোগ নেই। উপজেলার নির্বাহী অফিসার শামিমা আক্তার জাহান বলেন, খণ্ডকালীন শিক্ষক নিয়োগ নীতিমালার পরিপন্থি। এজন্য আমি ইতিমধ্যে বিষয়টি সংশ্লিষ্ট ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে অবগত করেছি। তাদের দিকনির্দেশনা অনুসারে পরবর্তী ব্যবস্থা নেয়া হবে। জেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার মো. রুহুল আমিন জানান, এ বিষয়ে তদন্ত করে যথাযথ ব্যবস্থা নেয়া হবে।

  • শেয়ার করুন