প্রকাশিত: ডিসেম্বর ৮, ২০২৫
প্রকাশিত:

নিজস্ব সংবাদদাতা ঃ
মানিকগঞ্জ-০১ (ঘিওর-দৌলতপুর-শিবালয়) সংসদীয় আসনে বিএনপি’র মনোনয়নপ্রাপ্ত প্রার্থীকে পরিবর্তন করার জন্য দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান ও নীতিনির্ধারকদের দৃষ্টি আকর্ষণের লক্ষ্যে সোমবার জাতীয় প্রেসক্লাবে জরুরী সংবাদ সম্মেলনকরা হয়।
ড. খোন্দকার আকবর হোসেন (বাবলু), সদস্য, আহ্বায়ক কমিটি, মানিকগঞ্জ জেলা বিএনপি, জ্যেষ্ঠপুত্র বিএনপি’র দুর্দিনের কান্ডারী প্রয়াত মহাসচিব খোন্দকার দেলোয়ার হোসেন। অপর দিকে ছোট বোন ডাঃ দেলোয়ারা বেগম পান্না, ছোট ভাই খোন্দকার আকতার হামিদ পবন, ভাতিজা মরহুম খোন্দকার আব্দুল হামিদ ডাবলুর ছেলে খোন্দকার রোমান । এছাড়াও আরো উপস্থিত আছেন-দৌলতপুর উপজেলা বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম সম্পাদক শফিউল আলম বিল্টু, ঘিওর উপজেলার সিংজুরী ইউনিয় বিএনপির সিনিয়র সহ সভাপতি আব্দুল আওয়াল মাষ্টার প্রমুখ শুরুতেই বাংলাদেশের তিনবারের সাবেক সফল প্রধানমন্ত্রী, গণতন্ত্রের মাতা, বিএনপির চেয়ারপার্সন, আপোষহীন দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার রোগমুক্তি ও সুস্বাস্থ্য কামনায় দোয়া করা হয়।
হাজারো ছাত্র-জনতা ও দলের অস্যংখ্য নেতা-কর্মীদের রক্তের বিনিময়ে জুলাই আন্দোলনে আমরা যে ফ্যাসিষ্ট, স্বৈরাচার, অবৈধ মাফিয়া সরকারকে উৎখাত করেছিলাম, সেই সরকারের কোনো দোসর সুবিধাভোগী এবং ৫ আগষ্ট পরবর্তী দলকে ব্যাক্তিস্বার্থে ব্যবহার করে লাভবান হওয়া ব্যক্তিকে মনোনয়ন দিয়েছে তাহা আমরা মেনে নিতে পারছিনা। আমরা চাচ্ছি সৎ, এলাকায় ক্লিন ইমেজ, সাহসী, বিগত আন্দোলন-সংগ্রামে ভূমিকা রাখা ও জনসাধারণের কাছে গ্রহণযোগ্য ব্যাক্তিকে দল থেকে যেন পুঃবিবেচনা করে মনোনয়ন দেয় সেই দাবী করছি। দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান ও নীতি নির্ধারকদের দৃষ্টি আকর্ষন করার পাশাপাশি দেশবাসীকে সার্বিক বিষয়ে অবহিত করার প্রয়োজনীয়তার উপলব্দি থেকে আজকের এই সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যেমে আমরা আমাদের দাবী প্রকাশ করলাম।
বিএনপি’র প্রয়াত মহাসচিবের সাথে আমার ছোট ভাই এ্যাডভোকেট মরহুম খোন্দকার আব্দুল হামিদ ডাবলু বাবার সাথে রাজনীতি করে আসছিলেন। আমি বাবার মৃত্যুর পরে বিএনপির চেয়ারপার্সন দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার আহ্বানে সাড়া দিয়ে ২০১২ সাল থেকে রাজনীতির মাঠে সরাসরি সম্পৃক্ত হই । আমাদের পরিবারের অন্য সদস্যরাও প্রতিকূল পরিবেশে একতাবদ্ধ হয়ে কাজ করেছি। রাজনীতিতে যোগদানের পর থেকেই এলাকায় ও কেন্দ্রে প্রায় প্রতিটি রাজনৈতিক কর্মসূচীতে অংশগ্রহণ করাসহ এলাকায় দুঃখ-দূর্দশায়, বন্যা, নদী-ভাঙ্গন ও কোভিডে বিপর্যস্ত এলাকাবাসীর পক্ষে সাধ্যমতো পাশে থেকে তাঁদের ভালোবাসা ও সম্মান অর্জন করেছি। আমার ভাই-বোনেরাও আমার পাশে থেকে সাধ্যমতো সহযোগিতা করে গিয়েছে। রাজনীতির কারণে অন্যান্য বিএনপি’র নেতাকর্মীদের মতো আমি আমার পরিবার আমার ভাই বোন বিশেষ করে আমার ছোট ভাই পবনসহ সকলেই হামলা-মামলা, জেল-জুলুম ও গ্রেফতারের শিকার হয়েছি। আলোচিত ২০২৩ সালের ২৮ শে অক্টোবরের সমাবেশে শেষ পর্যন্ত মাঠে থেকে আমি ও আমার অসংখ্য নেতাকর্মী টিয়ারশেলের আঘাতে আহত হয়েছি । ড্যামি নির্বাচনে পূর্ণ হরতাল অবরোধে বিএনপি’র সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রহুল কবির রিজভীর সাথে রাজপথে থেকে পিকেটিং এ অংশগ্রহণ করেছি। অবাধ এ তথ্য প্রবাহের যুগে আজ কোনো কিছুই গোপন নয় বিধায় আমার ও আমার পরিবারের বিগত আন্দোলন সংগ্রামের ভূমিকা ও ৫ আগষ্ট পরবর্তী ভূমিকা আমার সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম সহ প্রায় সকল প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক্স মিডিয়ায় প্রচারিত ও সংরক্ষিত আছে। আমি আজ অব্দি আমাদের দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান জনাব তারেক রহমান কর্তৃক ঘোষিত রাষ্ট্র কাঠামো মেরামতের ৩১ দফা নিয়ে মানিকগঞ্জ-০১ আসনে প্রতিটি এলাকায় দ্বারে দ্বারে এলাকাবাসীর কাছে গিয়েছি এবং যাচ্ছি।
গত ৪ ডিসেম্বর, ২০২৫ আমিসহ সারা দেশবাসী প্রত্যক্ষ করলো পূর্বে ঘোষিত বিএনপি’র স্থগিত হওয়া আসনগুলোতে মনোনয়ন প্রার্থীদের নাম ঘোষিত হলো। যার মধ্যে মানিকগঞ্জ-০১ (ঘিওর-দৌলতপুর-শিবালয়) আসনে এমন একজন প্রার্থীর নাম ঘোষণা করা হলো – যে নিজ এলাকায় তার সন্ত্রাসী কার্যক্রম, চাঁদাবাজী, দখলবাজী, বালু মহল দখলসহ নানা ধরনের অপকর্মে জড়িত। এই প্রার্থী আওয়ামী পরিবারের সন্তান, পতিত স্বৈরাচার মাফিয়া সরকারের কাছ থেকে সুবিধাভোগী দেশের এক বিতর্কিত শিল্পগোষ্ঠীর কর্ণধারের ঘনিষ্ট আত্মীয় ৫ আগষ্ট পরবর্তী এলাকায় এমন কোন হীন কাজ নেই যে তার এবং তার সাংগ-পাংগদের দ্বারা সংগঠিত হয় নাই । এই বিতর্কিত ব্যক্তির হাত থেকে দলের নিবেদিত নেতা-কর্মীসহ যারাই তার অপকর্ম ও অন্যায়ের প্রতিবাদ করেছে তাদের সকলকেই মিথ্যা মামলা হামলা ও জেল জুলুমের স্বীকার হতে হয়েছে। আজ তাঁদের কয়েকজন আজকের সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত আছেন। আপনারা তাঁদের কাছ থেকে তাঁদের মুখে তাঁদের উপর বিএনপি ঘোষিত প্রার্থীর অত্যাচারের বর্ণনা ধৈয্য ধরে শুনবেন বলে প্রত্যাশা ব্যক্ত করছি
দলের একজন নগণ্য কর্মী ও শতভাগ বাংলাদেশী জাতীয়তাবাদী ভাবধারায় বিশ্বাসী পরিবারের সদস্য হিসাবে আমিসহ আমার পরিবারের সকলেই দলের যে কোন সিদ্ধান্তের প্রতি অনুগত ও শ্রদ্ধাশীল। আমাদের দলের প্রতিষ্ঠাতা, স্বাধীনতার ঘোষক শহীদ রাষ্টপতি জিয়াউর রহমান বলেছিলেন, “ব্যাক্তির চেয়ে দল বড়, দলের চেয়ে দেশ বড়”। যদি তাই হয় তাহলে আমিসহ এলাকাবাসী এবং সারাদেশের অসংখ্য নেতাকর্মীদের ভিতর প্রশ্ন জেগেছে; অযোগ্যতা, এলাকায় ভাবমুর্তি এবং সর্বোপরি দলকে ব্যক্তিস্বার্থে ব্যবহার করে যিনি লাভবান হয়েছেন তিনি কিভাবে দলের মনোনয়ন পান? কি তার যোগ্যতা? তার যোগ্যতা কি তাহলে অবৈধ উপায়ে অর্জিত টাকা- পয়সা এবং কোনো বিতর্কিত শিল্পগোষ্ঠীর আর্শিবাদ?
পরিশেষে বলবো ১/১১এর সময় জাতীয় রাজনীতি থেকে আপোষহীন নেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে তৎকালীন মাঈনুদ্দিন-ফারুদ্দিন ও দোসররা মাইনাস করতে চেয়েছিলো কিন্তু সেই সময়ে আমার মরহুম পিতা সততা ও বিশ্বস্ততার সাথে দায়িত্ব পালন করে সেই অপচেষ্টা রুখে নিয়েছিলেন এবং সত্য ও ন্যায় প্রতিষ্ঠার জন্য সেফার ছিলেন। এখন জাতীয় ও মানিকগঞ্জের রাজনীতি থেকে মরহুম খোন্দকার দেলোয়ার হোসেনের পরিবারকে মাইনাস করার যে অপচেষ্টা, সেই অপচেষ্টা রুখে দেয়ার জন্য আমার পিতার অসমাপ্ত কাজ, রাষ্ট্রকাঠামো মেরামতে ৩১ দফা বাস্তবায়নে ভূমিকা রাখার নিমিত্তে আমাকে বিএনপির মনোনয়নে পূর্ণ বিবেচনা করে জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশগ্রহনের সুযোগ সৃষ্টির জন্য আমার প্রানপ্রিয় নেতা জনাব তারেক রহমানের সু-দৃষ্টি কামনা.