৭ই ডিসেম্বর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ, রবিবার,দুপুর ১:৪১

আড়াই যুগ পর দলীয় প্রার্থী পেয়ে উচ্ছ্বসিত বিএনপি নেতাকর্মীরা

প্রকাশিত: নভেম্বর ১০, ২০২৫

  • শেয়ার করুন

জেলা প্রতিবেদক ঃ

ভিআইপি আসন হিসেবে পরিচিত সুনামগঞ্জ-৩ (জগন্নাথপুর ও শান্তিগঞ্জ) আসনে দীর্ঘ প্রায় আড়াই যুগ পর দলীয় প্রার্থী হিসাবে তৃণমূল থেকে উঠে আসা তরুণ নেতা কয়ছর এম আহমদকে দলীয় প্রার্থী হিসেবে মনোনীত করায় দুই উপজেলার নেতাকর্মীদের মধ্যে আনন্দ-উচ্ছ্বাস বিরাজ করছে।

এ আসনটি ভিআইপি আসন হিসেবে পরিচিত। এ আসন থেকে বিগত ১৯৮৬ সালে জাতীয় পার্টির মনোনীত প্রার্থী হিসেবে আওয়ামী লীগ প্রেসিডিয়াম সদস্য আব্দুস সামাদ আজাদের সঙ্গে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে বিজয়ী হন সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী পরবর্তীতে স্পিকার হুমায়ূন রশীদ চৌধুরী। পরে এ আসন থেকে নির্বাচিত হন সাবেক অর্থ প্রতিমন্ত্রী ফারুক রশীদ চৌধুরী।

১৯৯১, ১৯৯৬ ও ২০০১ সালে পর পর তিনবার নির্বাচিত হন সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী আওয়ামী লীগ নেতা আব্দুস সামাদ আজাদ।

এদিকে সর্বশেষ ১৯৯৬ সালের ফেব্রুয়ারি মাসের জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিএনপি থেকে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছিলেন প্রবীণ নেতা গুলজার আহমদ। এর আগে ১৯৭৯ সালে বিএনপি থেকে দেওয়ান সামসুল আবেদীন সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। ২০০৫ সালে উপনির্বাচনে ৪ দলীয় জোট থেকে অ্যাডভোকেট শাহীনুর পাশা চৌধুরী নির্বাচিত হয়েছিলেন। প্রায় ৩০ বছর পর দলীয় প্রার্থী দিল বিএনপি। তৃণমূল থেকে উঠে আসা জগন্নাথপুর উপজেলা ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি ও যুক্তরাজ্য বিএনপির তিনবারের সফল সাধারণ সম্পাদক কয়ছর এম আহমদকে বিএনপি মনোনয়ন দিয়েছে।

এবারের নির্বাচন বিএনপির জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। প্রার্থিতার বিষয়ে দলীয় ত্যাগ, মাঠপর্যায়ে জরিপ, গোয়েন্দা তথ্যসহ বিভিন্ন দিক বিবেচনায় নিয়েই এবার সারা দেশে তুলনামূলক যোগ্যতাসম্পন্ন প্রার্থীদের মনোনয়ন দেওয়া হয়েছে বলে জানা গেছে। আন্দোলন-সংগ্রামে কয়ছর আহমদের ত্যাগ ও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকার জন্য দল তাকে এ ভিআইপি আসনে মনোনীত করেছে।

অন্যদিকে জেল-জুলুম নির্যাতনের কারণে ২০০৮ সালে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান সপরিবারে যুক্তরাজ্যে চলে যান। দীর্ঘ প্রায় ১৭ বছর তিনি বিদেশ থেকে গণতন্ত্রের জন্য লড়াই সংগ্রাম করছেন। মায়ের অসুস্থতার কারণে অনেক দিন ধরে দলে ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন।

বিগত সময়গুলোতে বিএনপি যুক্তরাজ্য থেকে আন্দোলন সংগ্রামের রূপরেখা পরিচালিত হয়ে আসছে। আন্তর্জাতিক সমর্থন আদায়সহ বিএনপির আন্দোলনের অন্যতম স্থান ছিল যুক্তরাজ্য। সেখানকার আন্দোলনের ঢেউ বাংলদেশসহ বহির্বিশ্বে জানান দিয়েছিল।

কাজেই যুক্তরাজ্যে কয়ছর এম আহমদ ও এম এ মালেকরা ছিলেন অতন্দ্র প্রহরী। সব আন্দোলন সংগ্রামে ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের অত্যন্ত বিশ্বস্ত ছিলেন তারা। দলের কঠিন সময়ে যুক্তরাজ্যে বিএনপিকে নেতৃত্ব দেওয়া মানুষগুলোকে মূল্যায়ন করেছেন দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান।

দলের মনোনয়ন পেয়ে এক প্রতিক্রিয়ায় মহান আল্লাহ পাকের শুকরিয়া জানিয়ে কয়ছর এম আহমদ মনোনয়ন দেওয়ার জন্য ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের কাছে কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন। তিনি জানান, আমি জগন্নাথপুর ও শান্তিগঞ্জ উপজেলাবাসীর উন্নয়নে কাজ করতে চাই। এ ব্যাপারে সবার দোয়া ও সমর্থন প্রত্যাশা করছি।

উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক আবু হুরায়রা ছাদ মাস্টার বলেন, দীর্ঘ প্রায় ৩০ বছর পর আমরা দলীয় প্রার্থী পেয়ে আনন্দের সঙ্গে গণসংযোগ শুরু করেছি। ইনশাআল্লাহ বিপুল ভোটে ধানের শীষের বিজয় হবে।

এ আসনে অন্য দলগুলোর প্রার্থী হিসেবে যারা গণসংযোগ করছেন তারা হলেন- জামায়াতে ইসলামীর অ্যাডভোকেট ইয়াছিন খান, খেলাফত মজলিশ নেতা সাবেক এমপি অ্যাডভোকেট শাহিনূর পাশা, জমিয়ত নেতা সৈয়দ তালহা আলম, স্বতন্ত্র মেজর (অব.) সৈয়দ আশফাক আহমদ, ব্যারিস্টার আনোয়ার হোসেন প্রমুখ।

  • শেয়ার করুন